ল্যাংড়া আম —এটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী আমের জাত, যা সুগন্ধি ও ভিন্ন স্বাদের জন্য বিখ্যাত।
🥭 ল্যাংড়া আম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য
✅ মূল পরিচয়:
- নাম: ল্যাংড়া (Langra)
- স্থানীয় নাম: অনেক এলাকায় একেই "বেনারসি ল্যাংড়া" নামেও ডাকা হয়
- জাতের ধরন: প্রাচীন দেশি জাত
- উৎপত্তিস্থল: ভারতের বারানসী (কথিত আছে এক ল্যাংড়া ফকিরের বাগানে প্রথম পাওয়া যায়, তাই নাম ‘ল্যাংড়া’)
🌿 বৈশিষ্ট্য:
বৈশিষ্ট্য |
বিবরণ |
আকার ও আকৃতি |
মাঝারি থেকে বড় আকারের, সামান্য লম্বাটে |
চামড়া/রঙ |
পাকার পরেও বাইরের অংশ সবুজ থাকে (হলুদ বা গাঢ় হয় না) |
ঘ্রাণ |
খুবই তীব্র ও প্রাকৃতিক সুবাস |
রস |
পরিমাণে বেশি, কিন্তু অতিরিক্ত তরল নয় |
আঁশ |
তুলনামূলকভাবে আঁশযুক্ত, তবে খাওয়ার অনুপযোগী নয় |
বীজ |
মাঝারি সাইজ, পাতলা |
স্বাদ |
তীব্র মিষ্টি ও টক-মিষ্টি স্বাদের মিশেল (অনন্য স্বাদ) |
🗓️ মৌসুম:
- সাধারণত জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত পাওয়া যায়
- হিমসাগর ও গোপালভোগ শেষ হলে বাজারে আসে
📍 প্রধান উৎপাদন এলাকা (বাংলাদেশে):
- রাজশাহী
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ
- দিনাজপুর
- নওগাঁ
- নাটোর
💰 ল্যাংড়া আমের দাম (২০২৫ অনুমান):
- পাইকারি বাজার: ১০০–১২০ টাকা/কেজি (অঞ্চলভেদে)
- খুচরা বাজার (ঢাকা/চট্টগ্রাম): ১৫০–২০০ টাকা/কেজি
🍽️ ব্যবহার:
ব্যবহার |
বিস্তারিত |
✅ সরাসরি খাওয়া |
ঘ্রাণযুক্ত ও মিষ্টি বলে কাটা খাওয়া সবচেয়ে উপভোগ্য |
✅ জুস |
আঁশের কারণে ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হয় |
✅ আমসত্ত্ব/চাটনি |
ঘন ও সুগন্ধি হওয়ায় দারুণ স্বাদ পাওয়া যায় |
❌ মিল্কশেক |
আঁশ থাকায় কিছুটা কম সুবিধাজনক |
🧪 পুষ্টিগুণ (প্রতি ১০০ গ্রাম):
উপাদান |
পরিমাণ |
ক্যালরি |
৬০–৭০ কিলোক্যালরি |
শর্করা |
১৪–১৬ গ্রাম |
ভিটামিন C |
উচ্চমাত্রায় |
আঁশ |
তুলনামূলক বেশি |
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট |
প্রচুর |
⚠️ সতর্কতা ও চেনার উপায়:
❌ ভেজাল থেকে বাঁচার টিপস:
- অতিরিক্ত ঝকঝকে ও চকমকে আম এড়িয়ে চলুন (প্রায়শই কার্বাইড দেওয়া হয়)
- প্রাকৃতিকভাবে পাকা ল্যাংড়ার চামড়া সবুজ থাকলেও চাপ দিলে কোমল অনুভব হয়
- অতিরিক্ত গন্ধযুক্ত আম কেমিক্যাল দেওয়া হতে পারে
✅ আসল ল্যাংড়া চিনবেন যেভাবে:
- বাইরের রঙ সবুজই থাকবে, হলুদ হবে না
- খোসা পাতলা ও মসৃণ
- কেটে দেখলে ভেতরটা গাঢ় হলুদ
- তীব্র মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়াবে, বিশেষ করে ডাঁটার দিক থেকে
🧊 সংরক্ষণ পদ্ধতি:
- ঘরে: শুকনো ও ঠান্ডা স্থানে ২–৩ দিন
- ফ্রিজে (কাটা): ৫–৭ দিন
- ফ্রিজে (জুস করে): ১–২ সপ্তাহ
- ডিপ ফ্রিজে (পিউরি করে): ১–২ মাস
Comments
Post a Comment