আমের প্রকারভেদ

আমের  বিভিন্ন প্রকারভেদ (Mango Varieties) নিয়ে সংক্ষিপ্ত এবং পরিষ্কার একটি তালিকা 


 বাংলাদেশের ও ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিখ্যাত আমের জাতগুলোকে প্রধানত ২ ধরনের ভাগ করা যায় — দেশি জাত এবং হাইব্রিড জাত


🥭 আমের প্রকারভেদ (Mango Varieties)


১. দেশি জাতের আম (Desi Varieties)

বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহ্যবাহী জাত, স্বাদে ও গুণে অনন্য।

নাম বৈশিষ্ট্য মৌসুম প্রধান উৎপাদন এলাকা
হিমসাগর মিষ্টি, কম আঁশ, বড় আকৃতি মে–জুন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ল্যাংড়া টক-মিষ্টি, ছোট আকার জুন–জুলাই রাজশাহী, মালদহ
গোপালভোগ অতিমিষ্ট, গন্ধযুক্ত, ছোট আকার মে–জুন নদীয়া (ভারত), রাজশাহী
ফজলি বড়, টক-মিষ্টি, আঁশ কম জুলাই–আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী
মল্লিকা হালকা টক-মিষ্টি, ঝাঁঝালো স্বাদ জুলাই–আগস্ট রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

২. হাইব্রিড জাতের আম (Hybrid Varieties)

বিভিন্ন দেশি জাতের সংকর থেকে তৈরি, অনেক সময় চাষে সহজ ও রোগ প্রতিরোধী।

নাম বৈশিষ্ট্য মৌসুম প্রধান উৎপাদন এলাকা
আম্রপালি অতিমিষ্ট, ঘন রসালো জুন–জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী
লাঙ্গড়া হাইব্রিড টক-মিষ্টি, সাদা মাংস জুন–জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অংশ
সোন্দরী মিষ্টি, তুলনামূলক ছোট জুন মালদহ, রাজশাহী
দশেহরি সুগন্ধি, মিষ্টি ও টক-মিষ্টি জুন–জুলাই মালিহাবাদ (ভারত)
নিমলু ছোট, মিষ্টি, ঘন রস জুন বিভিন্ন

৩. আমের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য জাত:

নাম বিশেষত্ব
কেসি ছোট, মিষ্টি, টক-মিষ্টি
সেনগুপি বড়, মিষ্টি, উচ্চমানের
সোয়েত বাংলাদেশের জনপ্রিয় জাত
আলফন্সো ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত আম
চাঁপা রসালো ও মিষ্টি

📝 সারাংশ:

  • দেশি জাত — ঐতিহ্যবাহী, স্বাদে অনন্য, বেশিরভাগেই আঁশ কম বা নেই, যেমন: হিমসাগর, গোপালভোগ, ফজলি
  • হাইব্রিড জাত — অধিক ফলনশীল, রোগপ্রতিরোধী, স্বল্পমেয়াদী, যেমন: আম্রপালি, মল্লিকা
  • মৌসুম — আমের জাতভেদ অনুযায়ী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় পাওয়া যায় (মে থেকে আগস্ট)
  • ব্যবহার — সরাসরি খাওয়া, জুস, আমসত্ত্ব, ডেজার্ট ইত্যাদি



🇧🇩 বাংলাদেশের জনপ্রিয় আমের জাতের বিস্তারিত


১. হিমসাগর আম

  • আকার: বড় ও মোটা
  • রঙ: পাকার সময় সোনালী হলুদ
  • স্বাদ: অতিমিষ্ট, আঁশ কম
  • গন্ধ: ঘন ও মিষ্টি সুবাস
  • মৌসুম: মে থেকে জুন মাস
  • বিশেষত্ব: রসালো, বিদেশেও রপ্তানি হয়

২. ল্যাংড়া আম

  • আকার: ছোট থেকে মাঝারি
  • রঙ: সবুজ থেকে হালকা হলুদ
  • স্বাদ: টক-মিষ্টি স্বাদের সমন্বয়, হালকা ঝাঁঝালো
  • গন্ধ: হালকা সুবাস
  • মৌসুম: জুন থেকে জুলাই
  • বিশেষত্ব: আঁশ কম, খেতে মসৃণ

৩. গোপালভোগ আম

  • আকার: ছোট ও গোলাকার
  • রঙ: পাকা হলে হলুদ ও লালচে ছোঁয়া
  • স্বাদ: অতিমিষ্ট ও দারুণ ঘ্রাণযুক্ত
  • গন্ধ: মিষ্টি ও চমৎকার সুবাস
  • মৌসুম: মে থেকে জুন
  • বিশেষত্ব: ঘ্রাণের জন্য বিখ্যাত, সারা বছর সংরক্ষণ কঠিন

৪. ফজলি আম

  • আকার: বড় ও লম্বাটে, ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত
  • রঙ: সবুজ থেকে হালকা হলুদাভ
  • স্বাদ: টক-মিষ্টি, আঁশ কম
  • গন্ধ: হালকা মিষ্টি সুবাস
  • মৌসুম: জুলাই থেকে আগস্ট
  • বিশেষত্ব: আন্তর্জাতিক বাজারেও জনপ্রিয়, সংরক্ষণে টেকসই

৫. আম্রপালি আম

  • আকার: মাঝারি
  • রঙ: সবুজ থেকে লালচে হলুদ
  • স্বাদ: অতিমিষ্ট, আঁশ কম
  • গন্ধ: সুগন্ধি ও ঘন
  • মৌসুম: জুন থেকে জুলাই
  • বিশেষত্ব: হাইব্রিড জাত, বেশি ফলনশীল, সংরক্ষণে ভালো

৬. মল্লিকা আম

  • আকার: মাঝারি থেকে বড়
  • রঙ: পাকা হলুদাভ
  • স্বাদ: ঝাঁঝালো ও মিষ্টি মিশ্রণ
  • গন্ধ: ঘন ও মিষ্টি
  • মৌসুম: জুলাই থেকে আগস্ট
  • বিশেষত্ব: হাইব্রিড, ঘরেও চাষযোগ্য (Dwarf গাছ)

৭. দশেহরি আম

  • আকার: মাঝারি
  • রঙ: সবুজ থেকে হলুদাভ
  • স্বাদ: টক-মিষ্টি, ঘ্রাণময়
  • মৌসুম: জুন থেকে জুলাই
  • বিশেষত্ব: ভারতীয় বিখ্যাত জাত, বাংলাদেশের অনেক জায়গায় চাষ হয়



Comments

Popular posts from this blog

লক্ষণ সেন

কাঠাল

কাচা আমের উপকারিতা