বাংলাদেশে উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
বাংলাদেশে বহু উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বসবাস করে, যারা দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করেছে। নিচে এদের সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো👇
🏞️ বাংলাদেশে উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
🔹 সংজ্ঞা:
“উপজাতি” বা “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী” বলতে এমন জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয় যারা সংখ্যায় কম, সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম, পোশাক, জীবনধারা ও সামাজিক কাঠামোর দিক থেকে প্রধান জনগোষ্ঠী (বাংলা ভাষাভাষী বাঙালি) থেকে আলাদা।
---
🌍 বাংলাদেশে উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা
বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুযায়ী দেশে প্রায় ৫০টির মতো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে।
তবে আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ অনুসারে স্বীকৃত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা ৫০টি।
---
🏔️ অঞ্চলভেদে বিভাজন
১️⃣ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান):
এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক উপজাতি বাস করে।
প্রধান উপজাতিসমূহ:
চাকমা
মারমা
ত্রিপুরা
মুরং
বম
খিয়াং
লুসাই
পাংখোয়া
তঞ্চঙ্গ্যা
চাক
👉 এদের অধিকাংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
---
২️⃣ পাহাড়বিহীন সমতল অঞ্চলে (উত্তর ও মধ্য বাংলাদেশ):
উত্তরবঙ্গ ও মধ্যাঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতিসমূহ:
সাঁওতাল
ওরাও (কুরুখ)
মুণ্ডা
মাহলী
পহাড়িয়া
হো
রাজওয়ার
👉 এদের অধিকাংশই হিন্দু বা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।
---
৩️⃣ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে (যেমন: যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, মাগুরা, ঝিনাইদহ):
ভূমিজ
বাউরী
বেদে (যাযাবর গোষ্ঠী)
পটুয়া
---
🎭 সংস্কৃতি ও জীবনধারা
তাদের নিজস্ব ভাষা, গান, নাচ, পোশাক, উৎসব ও ধর্মীয় রীতি আছে।
চাকমা ও মারমারা “বৈশাখী পয়লা”তে বিজু উৎসব পালন করে।
সাঁওতালরা বাহা বা সোহারাই উৎসব পালন করে।
পাহাড়ি নারীরা রঙিন পিনন-হাদি পোশাক পরে।
---
📚 বাংলাদেশের সংবিধানে স্বীকৃতি
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৩ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী,
> “রাষ্ট্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠীর বিশেষ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ঐক্যের বিকাশ, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবে।”
---
📊 জনসংখ্যা
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী,
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৬–২০ লাখের মধ্যে।
Comments
Post a Comment